এক বর্ধিষ্ণু বিশাল যৌথ পরিবারের পরিবেশে প্রথম চোখ মেলা থেকে শুরু করে যৌবনকাল পর্যন্ত কাটিয়েছি। সবার আদর, ভালোবাসা, শাসন পেয়ে পেয়ে বেড়ে উঠেছি। অনেক পাওয়া, অনেক না-পাওয়া -- এই সবকিছু নিয়েই কীভাবে যে সময়ের স্রোত পার হয়ে গেছে সেসব কখনও হিসেব করে দেখিনি। বন্ধুবান্ধব পাওয়ার ব্যাপারেও বোধহয় আমি বেশ ধনী। অসাধারণ মানসিকতার কিছু বন্ধু পেয়েছিলাম, যারা আজও উজ্জ্বল হয়ে আছে। আমাদের বিশাল পরিবারের মানুষগুলোর অনাবিল ভালোবাসা, শাসন, শিক্ষা এসব যেমন সমস্ত অনভিপ্রেত অশুভ থেকে আগলে রেখেছে সবসময়, হয়তো কিছু শুভ চেতনা ও বোধের শেকড়ও স্থায়ীভাবে গেঁথে দিয়ে গেছে মনের গভীরে সেই সুবাদেই, যা চিরকাল এক অজানা বা সুপ্ত অনুরণন রেখে গেছে ভেতরে ভেতরে। সেভাবে কি এসব খেয়াল করে দেখেছি কোনোদিন? মনে তো পড়ে না। ঠিক প্রচলিত অর্থে তেমন স্মৃতিচারণ নয়, কিন্তু, সম্ভবত নাটকের প্রতি আমার একান্ত ভালোবাসা, সেইসূত্রে অভিনয় করার তাগিদ—এসব থেকেই নানা আড্ডায় নানা সময়ে দেখা আশেপাশের মানুষদের কথাবার্তার ভঙ্গি, আচরণ যতটা সম্ভব তাঁদের মতো করেই দেখাতে চেষ্টা করতাম অভিনয় করে, বা নিজের স্বাভাবিক কথা বলার ভঙ্গিতেই গল্প করে। চাকরিজীবনে পাহাড়-জঙ্গলের ক্যাম্প লাইফে নানা ভাষাভাষী সহকর্মীদের কাছে যেমন, তেমনি শহুরে বন্ধুদের কাছেও আমার এই নকশাগুলি খুব প্রশংসা পেত। তবে এসব নিয়ে লেখালিখি করার মতো ভাবনা বা সাহস মনে জাগেনি কখনো।
—তুষার ভট্টাচার্য বইমেলা, ২০২৫
টুকরো আঠারো
Bengali